বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম শিখুন সহজেই

ইন্টারনেটে লেখালেখি করতে চাইলে দরকার হয় সঠিক নিয়ম মেনে বাংলা আর্টিকেল লেখা শেখা। যারা কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে চান তাদের জন্য আজকের এই লেখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন নতুন ব্লগার হোক কিংবা অভিজ্ঞ লেখক সবার জন্য এই গাইডলাইন কাজে দেবে।

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম জানা প্রতিটি ব্লগারের জন্য অপরিহার্য। তাই এখন আমরা আলোচনা করব কিভাবে আপনি একটি মানসম্মত আর্টিকেল তৈরি করবেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ আপনাদের জন্য বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম। 


সূচিপত্রঃ বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম


বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম 

বাংলা ভাষায় কনটেন্ট লিখতে গেলে অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু গাইড লাইন অনুসরণ করতে হয়। শুধু শব্দ লিখলেই ভালো কনটেন্ট হয় না পাঠক যেন তা পড়ে উপকৃত হয় সেটাই আসল কথা। কোন পোস্টে ফোকাস কীওয়ার্ড, হেডিং, সাবহেডিং, প্যারা এবং উপসংহার থাকা আবশ্যক। একটি গঠনমূলক আর্টিকেল মানেই পাঠকের সমস্যার সমাধান করা এবং গুগলে ভালো র‍্যাংক পাওয়া। আর এজন্যই আমাদের দরকার নির্দিষ্ট নিয়মের লেখা পোস্ট যা এসইও ফ্রেন্ডলি এবং মানসম্পন্ন। 


ফোকাস কিওয়ার্ড বেছে নেওয়ার উপায় 

একটি ভালো কিওয়ার্ড বাছাই হচ্ছে কনটেন্ট রাইটিং এর মূল ভিত্তি। আপনার লেখা যত সুন্দরই হোক না কেন সার্চে যদি তা না আসে তবে লেখার মূল্য অনেকটা কমে যায়। বাংলায় লেখার সময় এমন কিছু কিওয়ার্ড  বাছুন যেটি মানুষ বেশি সার্চ করে কিন্তু এই সম্পর্কে কন্টেন্ট কম আছে।

 আপনি Google Trends, Ubersuggest, বা Ahrefs এর মত টুল ব্যবহার করে এই কাজটি খুব সহজেই করতে পারবেন। ফোকাস কিওয়ার্ডটি অবশ্যই শিরোনাম, মেটা ট্যাগ এবং প্রথম অনুচ্ছেদে ব্যবহার করতে হবে। কিওয়ার্ড নির্বাচন করার সময় খেয়াল রাখবেন যেন তা লং টেইল হয়। কারণ লং টেইল কিওয়ার্ড ব্যবহার করলে কম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয় এবং গুগলে র‍্যাংক করার সম্ভাবনা বাড়ে।


আকর্ষণীয় টাইটেল লেখার কৌশল 

টাইটেল ই একজন পাঠককে ক্লিক করতে উৎসাহিত করে। বাংলা টাইটেল লেখার সময় অবশ্যই শুরুতেই ফোকাস কিওয়ার্ড টি বসাতে হবে। টাইটেল যেন ৬০ ক্যারেক্টারের মধ্যে হয় এবং খুব সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় হয়। এছাড়াও টাইটেলে বিশেষ কোনো জ্যোতি চিহ্ন ব্যবহার না করাই ভালো। পাঠকের কৌতূহল বাড়ায় এমন শব্দ ব্যবহার করলে টাইটেল আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়। 


উপযুক্ত ভূমিকা লেখার নিয়ম 

ভূমিকা অংশের লেখাটি কেন গুরুত্বপূর্ণ তা সংক্ষেপে বলা উচিত। এটি হতে হবে তিন থেকে চার লাইনের মধ্যে এবং  কিওয়ার্ড সন্নিবেশ করতে হবে প্রাকৃতিকভাবে। পাঠককে আগ্রহী করে তুলতে ভূমিকার ভাষা হতে হবে সরল,স্পষ্ট এবং মানবিক। অনেকেই আছেন যারা শুধু ভূমিকা পড়ে পোস্টে ক্লিক করেন না ছেড়ে দেন, তাই এতোটুকু অংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভূমিকা শেষে একটি বাটন বা লিংক যোগ করতে পারেন যা পাঠককে আর্টিকেলের মূল অংশে নিয়ে যাবে। এটি পাঠকের জন্য একটি গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে। 


ফিচার ইমেজ ব্যাবহারের নিয়ম 

প্রতিটি পোস্টে একটি ফিচার ইমেজ থাকা আবশ্যক। ইমেজ যেন পোষ্টের মূলভাব প্রকাশ করে । ভূমিকা বাটন এর নিচে ও ফিচার image 1 এর উপরে দুই লাইন লিখতে হবে। ফিচা্র ইমেজ ১ এর নিচে ও পেজ সূচিপত্রের উপরে দুই লাইন লিখতে হবে। ইমেজ এসইও আজকের দিনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ভিজুয়াল কনটেন্ট পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ও শেয়ার বাড়ায়। 


এসইও ফ্রেন্ডলি হেডিং কিভাবে বানাবেন 

হেডিং লেখা মানে শুধু বড় বড় করে লেখা নয়, বরং সেটি হতে হবে এস ইও ফ্রেন্ডলি। প্রতিটি হেডিং এ হালকা করে  কিওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট শব্দ থাকতে হবে। হেডিং যেন ৫ থেকে ৮ শব্দের মধ্যে হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি হেডিং এর নিচে কমপক্ষে দুইটি অনুচ্ছেদ থাকতে হবে এবং সর্বোচ্চ পাঁচটি অনুচ্ছেদ লেখা যাবে।এইভাবে হেডিং তৈরি করলে গুগল সহজে বোঝে কনটেন্টের কাঠামো। এছাড়াও অযথা Bold, Italic বা কালার পরিবর্তন করা যাবে না। প্রতিটি পোস্ট Justify রাখতে হবে।


অনুচ্ছেদ গঠন ও শব্দ সংখ্যা কন্ট্রোল 

প্রতিটি প্যারা হতে হবে তিন থেকে পাঁচ লাইনের মধ্যে। একটি অনুচ্ছেদে একটি বিষয়ের উপরেই লেখা উচিত কারণ অনেক বড় প্যারা পাঠককে বিরক্ত করে ও স্ক্রিনে দেখতে অসুবিধা হয়। সংক্ষেপে ও সহজ ভাষায় বিষয় বুঝিয়ে বলায় সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। প্রতি হেডিং এর নিচে সর্বোচ্চ পাঁচটি প্যারা রাখতে পারবেন যাতে ভারসাম্য বজায় থাকে। 


পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখার কৌশল 

স্মার্টফোনের যুগে মনোযোগ খুবই কম থাকে তাই লেখাকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। লেখা এমন ভাবে উপস্থাপন করুন যেন পাঠক সহজে বুঝতে পারে। জটিল শব্দ বাক্য পরিহার করুন এবং সহজ ভাষা ব্যবহার করুন। একইভাবে মাঝে মাঝে উদাহরণ কিংবা বাস্তব অভিজ্ঞতা বা গল্প বললে পাঠক বেশি যুক্ত হয়। আপনি কিংবা আমরা এই ধরনের মানবিক শব্দ পাঠকের সাথে সংযোগ তৈরি করে। ছোট ছোট বাক্যে পাঠক দীর্ঘ সময় পোস্টে থাকে ও পুরোটা পড়ে। 


কনটেন্টে অভ্র বাংলা টাইপিং এর গুরুত্ব 

সঠিক বানান ও টাইপিং  কনটেন্ট এর মান অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়। অভ্র কিবোর্ড বাংলা লেখার জন্য খুবই উপযোগী এবং বানান শুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। ভুল বানান ও বাক্য গঠন একটি ভালো কনটেন্ট কেও নিচে নামিয়ে দিতে পারে। তাই টাইপ করার আগে প্ল্যান করে নেওয়া এবং বানান রিভিউ করা উচিত। বিশেষ করে যেসব কিওয়ার্ড বেশি সার্চ হয় সেগুলোর বানান একদমই ভুল থাকা উচিত নয়।


উপসংহার লেখার সঠিক নিয়ম 

লেখার শেষ অংশ টাই পাঠকের মনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। উপসংহারের মূল বিষয়গুলি সংক্ষেপে বলে দিতে হয়। ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করে দুই থেকে তিন লাইনের মধ্যে সারাংশ তুলে ধরাই ভালো। এটি পাঠককে লেখার মূল পয়েন্ট মনে রাখতে সাহায্য করে। সঠিক উপসংহার ছাড়া কোন কনটেন্টটি পূর্ণ হয় না। 


শেষ কথা 

বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম শুধু শেখার নয় তা চর্চারও বিষয়। নিয়ম মেনে একবার লিখে অভ্যাস করে ফেললে প্রতিটি পোস্ট হয়ে যাবে প্রফেশনাল লেভেলের । তাই নিজের ভুল থেকে শিখুন, নিয়ম মেনে লিখুন এবং নিজের কনটেন্টে গর্ব করুন ।


আমার মন্তব্য 

এই পোস্টটি আপনার লেখালেখির যাত্রা করবে সহায়ক বলেই আমি বিশ্বাস করি। নিজের কনটেন্ট নিজে গড়ে তোলার আনন্দই আলাদা তাই  শুরু করুন এখনই।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url